বিল্লাল হোসেন: বসার বেঞ্চ ও ভবনের দরজা-জানালা নেই, শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট, কখনো ভিতরে আবার কখনো বাহিরে ক্লাশ করা এবং বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানিসহ নানা সমস্যা দমাতে পারেনি ওদের। ওরা শিশু শিক্ষার্থী। বৃষ্টি হলে চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে ওরা ভিজে যাচ্ছে; তবুও বই-খাতা বুকে আগলে রেখে নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছে বিদ্যালয়ে। এই চিত্র মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের মাঝেরকান্দি গ্রামের ১৬২নং বড়চর কয়ারিয়া টুকরাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের; যেখানে সমস্যার কোন ইতি নেই। এটি ১৯৯৪ সালে কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে ২০১১ সালে রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নতি করা হয়। এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গেজেট অনুযায়ী এখন এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে আর কোন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়নি। ৬ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন ৪ জন। এদের মধ্যে আবার দু’জনের বেতন ২০১০ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আব্দুল হালিম ও একাধিক বার মাদারীপুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শাহনাজ পারভিন জানান, বৃষ্টি হলে পানি পড়ে তখন ক্লাশ নিতে কষ্ট হয়। নানা সমস্যার পরও শিক্ষাকাযক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধান শিক্ষিকার বাড়ির ডাইনিং টেবিল এনে আমরা অফিস পরিচালনা করছি। প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম বলেন, ‘বসার বেঞ্চ না থাকায় কোমলমতি শিশুরা বাড়ি থেকে পাটি ও ছালার চট নিয়ে আসে। বৃষ্টি হলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। তাই দ্রুত একটি ভবন নির্মাণ করা জরুরী।’
উপজেলা প্রাথমিক সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা নাদিরা আফরিন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে ভবন, আসবাবপত্র ও শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে তবে এগুলো সমাধানে আমাদের কোন হাত নেই। আমরা প্রায়ই উপরমহলে প্রতিবেদন পাঠাই কিন্তু কাজ না হলে কিছু করার নাই।’ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল হাসান মন্টু বলেন, ‘অবহেলিত এলাকা উন্নয়নের জন্যই এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু এখন ভবনসহ নানা সমস্যায় স্কুলটি জর্জারিত হয়ে পড়েছে।’